কামাল উদ্দীন চৌধুরী:
——————————-
প্রায় ৫ মাস আগে আকদ হয়েছিল তবে ঘরে উঠানো হয়নি।এরই মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের হুমকি ও কাবিননামার টাকা দিতে না পারায় আত্নহত্যা করে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিলেন ফটিকছড়ির যুবক ইমরাজ। ঘটনাটি ঘটেছে ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের আলমদা তালুকদার বাড়িতে।
সে ছিলো পেশায় একজন স্টিল সেন্টারিং এর মিস্ত্রি। ৯ লাখ টাকা কাবিন দিয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মেয়ে ফারিয়াকে বিয়ে করেছিলেন।
জানা যায়, মাত্র ৫ মাস আগে তাদের আকদ হয়েছিল,আকদ করা নতুন বউকে ঘরেও তোলা হয়নি,এরই মাঝে যুবক ইমরাজ আকদ্ করা মেয়েটির আচরণে বুঁঝতে পারেন তার আকদ করা বউটি অন্যজনের সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত।
এসব নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর স্বামী স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ মনোমালিন্য,মানসিক নির্যাতন অবশেষে চিরকুট লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন যুবক ইমরাজ।
গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮ টার দিকে ইমরাজ তার ঘরের পেছনে গাছের সাথে আত্মহত্যার জন্য ফাঁস দিলে পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত চমেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর দীর্ঘ ৮ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ১৫ ডিসেম্বর রাত ২ টার ৪৫ মিনিটের মৃত্যু বরণ করেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন বাদে মাগরিব জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মাস আগে ইমরাজ উদ্দিনের সাথে চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়া এলাকার ফারিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে কথাবার্তা ঠিক হয়ে আকদ হয়।আকদের পর থেকে ফারিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ইমরাজ এর সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করে।
মানসিক নির্যাতন থেকে শুরু করে সব সময় টাকা পয়সা নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা চাপ সৃষ্টি করে। হঠাৎ একদিন ইমরাজ তাদের বাসায় বেড়াতে গেলে ফারিয়া ইমরাজকে সাথে রেখেই অন্য ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলে।
ইমরাজ বিষয়টি ফারিয়ার মাকে (নতুন শাশুড়ীকে) জানান, এরপর থেকেই শুরু হয় স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া-ঝাটি। নতুন আকদ করা বউটির প্রশ্ন ছিল কেন অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক থাকার বিষয়টি তার মাকে জানানো হলো ? শেষ পর্যন্ত বিষয়টি বিয়ে ভাঙ্গা এবং তালাক পর্যন্ত গড়ায়।
এক পর্যায়ে মেয়ের পরিবার তাদের কাবিনের টাকা দাবি করে। কাবিনের টাকা পরিশোধ করতে অক্ষম ছেলে।শেষ পর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যা করলেন ফারিয়ার পরিবার এবং ফারিয়ার জন্য। আত্মহত্যার আগে সবার জন্য একটি পত্র লিখে যান ইমরাজ।সেখানে বিস্তারিত লিখে যান তিনি।
ইমরাজের ময়নাতদন্তের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে লাশ গ্রামের বাড়িতে নেয়া হলে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়,এলাকা জুড়ে আপনজন সবার মাঝে ছিল শুধুই কান্নাকাটি।
এলাকাবাসী এবং তার পরিবারের লোকজন প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে শীঘ্রই আইনি ব্যবস্থা তথা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।